
১৮ অক্টোবর চ্যানেল আইয়ের টক শো
‘তৃতীয় মাত্রা’র ২৯৯৪তম পর্বে তিনি অবিশ্বাস্য এই গল্প শুনিয়েছেন। এ ছাড়া
তিনি শুনিয়েছেন, যোগাযোগ মন্ত্রণালয়কে ঢেলে সাজানোর বিষয়ে আবুল হোসেনের
বর্তমান মনোভাব। এ বিষয়ে তৃতীয় মাত্রার উপস্থাপক জিল্লুর রহমানের সঙ্গে
গোলাম মাওলা রনীর কথোপকথনের পুরোটাই রস+আলোর পাঠকদের জন্য হুবহু প্রকাশ করা
হলো।
গোলাম মাওলা রনী: তিনি কীভাবে মন্ত্রী হয়েছেন, যদি সে কাহিনি শুনেন। ইটস এ প্রধানমন্ত্রীর একটা গিফট, শোনা যায়।
সঞ্চালক (জিল্লুর রহমান): আপনি জানেন?
গোলাম মাওলা রনী: হ্যাঁ, অবশ্যই জানি।
জিল্লুর রহমান: শোনাবেন?
অবশ্যই
আমি আপনাকে শোনাচ্ছি। সেটা হলো এই যে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তখন
বিরোধীদলীয় নেত্রী ছিলেন। সম্ভবত ২০০৫ অথবা ৬ সালে—আপনার মনে আছে—উনি একবার
চীন ভ্রমণে গেলেন। চীন ভ্রমণে যাওয়ার পরে ওখানে হ্যান্দো নামে একটা
প্রভিন্স আছে। সেখানে একটা লেক আছে। ওয়েস্ট লেক। তো, আপনাদের জানা আছে যে,
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী—তাঁর ভেতরে একটা সরলতা কাজ করে। অনেকের সাথে বসে তিনি
গান শুরু করেন, আলাপ-আলোচনা করেন। পারিবারিক একটা আবহ সৃষ্টি হয়, এ রকম
একটা ব্যাপার।
তো, ওয়েস্ট দ্বীপে ওই পরিবেশে গিয়ে হঠাৎ করে তাঁর কী মনে
হলো, তিনি বললেন যে, একটা বাঁশি ম্যানেজ করো তো। তো, সাম হাউ একটা বাঁশি
ম্যানেজ করা হলো। সাথে সাবের হোসেন চৌধুরী ছিলেন, ওবায়দুল কাদের সাহেব
ছিলেন আর আমাদের আবুল হোসেন সাহেবও ছিলেন। তো, প্রধানমন্ত্রী বললেন যে, আমি
বাঁশিতে একটা ফুঁ দেব। তোমরা তিনজন দৌড় দিয়ো। দৌড়ে যে ফার্স্ট হবে তাকে
আমি মন্ত্রী বানাব।
এখন যেহেতু প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ওবায়দুল কাদের,
সাবের হোসেন চৌধুরী দৌড় দিলেন। কিন্তু আবুল হোসেন টুক ইট ভেরি সিরিয়াসলি।
সে জোরে দৌড় দিল এবং দৌড়ে সত্যিই সে ফার্স্ট হয়ে গেলেন। এসে তিনি
প্রধানমন্ত্রীকে বলতেছেন যে, আপনি কমিটমেন্ট করেছেন, আমাকে মন্ত্রী
বানাবেন। আমি যোগাযোগমন্ত্রী হব।
তো, প্রধানমন্ত্রী যতই বারবার বলেন না
কেন যে, আমি তোমার সঙ্গে দুষ্টামি করেছি, আমি এখন বিরোধীদলীয় নেত্রী।
আগামীতে ক্ষমতায় আসব কি না-আসব, তার কোনো ইয়ত্তা নাই, কী সব কথাবার্তা বলো?
তিনি বলেন যে, না, আপনি হবেন এবং আমাকে কথা দিতে হবে যে, যোগাযোগমন্ত্রী
বানাবেন।
এবং তিনি এমপি হওয়ার পরে সেই জিনিসটা আবার প্রধানমন্ত্রীকে
স্মরণ করাইয়া দিছেন। কমিটমেন্টের কথা বলছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে। এই হলো
তার যোগাযোগমন্ত্রী হওয়ার সত্যিকারের ইতিহাস। এর বাইরে যে সমস্ত কথাবার্তা
বলছেন, যা কিছু বলছেন; দিস ইজ নট দ্য রিয়েলিটি। আমরা তো কাছাকাছি থাকি,
আমরা জানি।
মাননীয় যোগাযোগমন্ত্রী নিজেকে এমনভাবে চেনেন যে, আমরা তাঁকে
ওইভাবে চিনি না। যেমন, সংসদে আমরা যখন প্রশ্ন করি তখন উনি উত্তর দেন এবং
সকলের নাম, আরবি নাম এবং সেটার বাংলা অর্থ কী, সেটা উনি অনেকক্ষণ বসে বসে
ব্যাখ্যা দেন। সমস্ত সংসদে তিনি ঠাট্টা-মশকরা করেন। উনি বোঝেন না যে, ওনাকে
নিয়ে ঠাট্টা করা হচ্ছে। উনি মনে করেন, সব মানুষ যে হাসাহাসি করছে, মনে হয়
তাঁর প্রশংসাই করছে। এই একটা ব্যাপার।
এবং আপনি আরও আশ্চর্য হয়ে যাবেন
এটা বললে যে, আরও ছয়-সাত মাস আগে একদিন আমায় বললেন যে, রনী, সারা পৃথিবীতে
ট্রান্সপোর্ট মিনিস্টার মিনস বিমান মন্ত্রণালয় তার আন্ডারে থাকবে, যোগাযোগ
মন্ত্রণালয় তার আন্ডারে থাকবে এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় যেটা, সেটাও তার
আন্ডারে থাকবে। আমি যে এত কাজগুলো করতেছি, সেগুলো এত দক্ষতার সঙ্গে যে, এই
সব কাজ করার পরও আমার হাতে প্রচুর সময়। বিমান চালাতে পারছে না? না পারলে
আমাকে দিয়ে দিক। যদি নৌপরিবহনমন্ত্রী ওই মন্ত্রণালয় না চালাতে পারেন, আমাকে
দিয়ে দিন; আমি সবগুলো চালাব। কীভাবে কাজ করতে হয়, আমি দেখাইয়া দিতে চাই।
আজ থেকে ছয় মাস আগে এই হলো তাঁর অনুভূতি।