
আমরা
কাউকে হাসাতে চাইলে দুষ্টুমি করে তার বাহুমূলে (বগলে) সুড়সুড়ি দিই, আর
অমনি সে হেসে কুটিপাটি। পা ও হাতের তালুসহ শরীরের আরও কতগুলো স্থান এ রকম
স্পর্শকাতর; সামান্য ছোঁয়াতেই ভীষণ সুড়সুড়ি লাগে। এর কারণ হলো, ওই সব
স্থানে অনেক বেশি স্নায়ুতন্তুর সমাবেশ রয়েছে। সে কারণে সেখানে খুব হালকা
স্পর্শও প্রবলভাবে অনুভূত হয়।
কিন্তু প্রশ্ন হলো, কেন শরীরের কয়েকটি
নির্দিষ্ট স্থানে স্নায়ুতন্তুর ঘন সন্নিবেশ। বিজ্ঞানীদের মতে,
মানব-প্রজাতির বিবর্তনের ধারায় এ সুড়সুড়ি লাগার ব্যাপারটি ভূমিকা রেখেছে।
অবাক হতে হয় এই ভেবে যে, বাহুমূল স্পর্শকাতর হলে একটি প্রজাতি কি তার
বিবর্তনে বিরাট উপকার পেতে পারে? বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিরা বলেন, সেটা হতে পারে।
বগলের অবস্থান এমন যে সেখানে কোনো খোঁচা লাগলে তার পরিণামে পুরো বাহুর
স্নায়ু ও শিরাতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, এমনকি হাত অবশ হয়ে যেতে পারে।
সে জন্যই বাহুমূলে সামান্য স্পর্শানুভূতি সতর্কসংকেত হিসেবে কাজ করে। পা ও
হাতের তালুর ব্যাপারও ওই রকমই। আদিম যুগে খালি পায়ে মানুষ চলাফেরা করত। সে
সময় সুরক্ষার জন্য পায়ের তালুর চামড়া পুরু ও শক্ত হয়েছে। কথাটা ঘুরিয়ে বলা
যায়, মানব-প্রজাতির পায়ের নিচের পুরু চামড়ার কারণে বিবর্তনের ধারায় তার
টিকে থাকা সহজ হয়েছে।